ঢাকা, শনিবার ২০ জুলাই ২০২৪, ১২:৩০ অপরাহ্ন
টাকার অভাবে বই কিনতে পারেননি উখিয়ার সেই রিপা
সমকাল ::

পুরো টুর্নামেন্টের পাঁচ ম্যাচের খেলেননি দুই ম্যাচ, তবুও যেন তাকে কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। তিন ম্যাচে ৫ গোল করে হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার কৃতি ফুটবলার ফুটবলার শাহেদা আক্তার রিপা।

গ্রুপ পর্বে ভারত ও নেপালের বিপক্ষে না খেললেও ভুটানের জালে দুই গোল ও শ্রীলংকার জালে জড়ান তিন গোল। আর এতেই জিতেছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ফাইনালে ভারতকে হারানোর ম্যাচেও অবদান আছে রিপার। তার বাড়িয়ে দেয়া বলে আনাই মোগিনি গোল করেন। একমাত্র সেই গোলে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। জয়ের পর দেশ বিদেশে সুনামে ভাসছে রিপার নাম।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজকের এই অবস্থানে কক্সবাজারের মেয়ে রিপা। বাবা-মা, তিন বোন ও এক ভাই নিয়ে তার পরিবার। এই বড় পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন রিপার বাবা জালাল আহমেদ। দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি। দিন মজুরের কাজ করেও সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যাপারে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। ফুটবল দলের তারকা হয়েও কষ্টের অতীত মনে রেখেছেন রিপা, ‘আমি ও আমার ভাই বোন কখনো গাইড বই কিনতে পারিনি। প্রাইভেটও পড়তে পারিনি। এভাবেই আমরা পড়াশোনা করেছি।’

মাসখানেক আগেও রিপাদের ঘর ছিল মাটির। রিপা ও তার ভাইবোনরা মিলে বাড়িটি পাকা করেছে। রিপার বাবা জালাল আহমেদ অসুস্থতার কারণে কাজ করতে পারেন না। তাই তিন ভাই বোনের মিলিত আয়েই চলে রিপাদের পরিবার। তারকা এই ফুটবলার তার বোনদের মধ্যে মেঝ। ভাই সবার বড়। কক্সবাজারেই ছোটখাটো একটা চাকরি করেন। তার বড় বোনও পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করেন।

ছোট হলেও ফুটবলার হওয়াতে ভাইবোনদের মধ্যে রিপার আয় বেশি। এতে পরিবারের পাশে ভাল অবদান রাখতে পেরে তৃপ্ত রিপা, ‘আমি যেহেতু খেলাধুলা করি তাই আমি ওদের চেয়ে একটু বেশি সহায়তা করতে পারি। আমরা ভাই বোনরা চাইতাম বাবার যেন আর কষ্ট না করতে হয়। সেই কষ্ট লাঘব হওয়ায় এখন আমি তৃপ্ত।’

ফুটবলার রিপা হতে পারতেন ক্রিকেটারও। ক্রিকেটটাও বেশ ভাল পারেন তিনি, ”আমি ক্রিকেটেও অনেক ভালো খেলি। বিকেএসপিতে ভর্তির সময় আমার ফুফাতো ভাই বলেছিল ফুটবলে ট্রায়াল দিতে। ফুটবলে ট্রায়ালে টিকে যাওয়ার পর থেকেই ফুটবল আমার ধ্যানজ্ঞান। না হলে ক্রিকেটারও হতে পারতাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *