কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে ফেরার পথে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার।
মঙ্গলবার রাতে নিহতের বড় ভাই নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসি শেখ মুনিরুল গিয়াস। তিনি জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে একটি এজাহার জমা দেওয়া হয়। পরে সেটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। মামলা নং- ১৭। এতে ১৭ জন-পরিচয় নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করা হয়েছে। প্রধান আসামী করা হয়েছে আজিজ সিকদারকে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন জানান, পুলিশ এই ঘটনায় ইতিপূর্বে ৬ জনকে আটক করছে। তাদেরকে ৫৪ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আটক এই ৬ জন ব্যক্তিকে ফয়সালের পরিবারের দায়ের করা এজাহারে আসামী করা হয়েছে সেটি কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে নিহত ফয়সালের স্বজনদের কাছ থেকে মামলার এজাহারে উল্লেখিত ১৭ জন আসামীর নাম পেয়েছে টিটিএন। তারা হলেন- প্রধান আসামী আজিজ সিকদার ওরফে আজিজ (৩৭)। তিনি ওই এলাকার মৃত বাঁচা মিয়া সিকদারের ছেলে। এছাড়াও অন্য আসামীরা হলেন- খুরুশকুল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মধ্যম ডেইলপাড়া এলাকার সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে ফিরোজ আলম (৩৬), বাঁচা মিয়া সিকদারের ছেলে জহিরুল হক ওরফে জহির (৪০), মনিউল হকের ছেলে শামসুল হুদা সিফাত (২৫), সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে মো. আরিফ ওরফে ধইল্যা (৪৫), ফজল হক সিকদারের ছেলে রফিক (৫০) ও দিদার (৩০), মনিউল হকের ছেলে একরামুল হুদা ইমন (২৪), সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে ফরিদুল আলম (৫০), মনিউল হকের ছেলে বদরুল হুদা (২২), ফরিদুল আলমের ছেলে ফাইরুজ আলম ওরফে লেফটা (২৪), সিরাজুল হক সিকদারের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওরফে বাক্কুইল্যা (৪৮), জহিরুল ইসলাম বাক্কুইল্যার ছেলে মো. তারেক (২৪), রফিক সিকদারের ছেলে রিয়াদ সিকদার (২৫), ফরিদুল আলমের ছেলে মো. মুন্না (১৯), পেঁচারঘোনা এলাকার হাছান আলীর ছেলে মো. হামিদ (২৩) ও ফজল কাদেরের ছেলে মো. রিয়াদ (২৪)।
এদিকে পুলিশের সামনে খুন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের অবহেলার অভিযোগ উঠলেও মামলার এজাহারে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।
মঙ্গলবার রাত ১১.৩০ মিনিটে থানা কম্পাউন্ডে কথা হয় মামলার বাদী ফয়সালের বড় ভাই নাছির উদ্দীনের সাথে। তিনি বলেন, “আমাদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যদি ওই পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসআই রায়হানের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতা খুনের অভিযোগের বিষয়টি তদন্তে ইতোমধ্যে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির শিগগিরই প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।
তবে খোদ ছাত্রলীগের কিছু নেতা পুলিশ কর্মকর্তার পাশাপাশি অভিযোগের আঙুল তুলছেন সেদিন সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের বিরুদ্ধে। তারা (সম্মেলনে উপস্থিত নেতা) ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না বলে মত দিচ্ছেন অনেকেই।
এদিকে ঘটনার পরপরই প্রধান অভিযুক্ত আজিজ সিকদারকে আটক করেছে র্যাব। র্যাবের দাবী, এই ঘটনায় জড়িত আজিজসহ ২ জনকে আটক করেছে তারা৷ এই বিষয়ে মঙ্গলবার রাত ১১ টার সময় প্রেস ব্রিফিং করার কথা থাকলেও পরে সময় পরিবর্তন করা হয়।
আজিজ সিকদারসহ আটক দুই আসামীর বিষয়ে বুধবার সকালে ব্রিফিং করার কথা রয়েছে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে।
Leave a Reply