❤️❤️❤️❤️❤️”আমার বাবা”❤️❤️❤️❤️❤️
বাবাকে নিয়ে কি লিখব? কোন উত্তরই খুঁজে পাচ্ছি না। সবাই যার যার মতো লিখছে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছে। আমি কিছুই লিখতে পারছি না। এক অজানা আতঙ্ক আর ভয় আমার মধ্যে কাজ করছে। আমার লিখা শব্দগুলো বা বাক্যটি বাবা কিভাবে দেখবে? অন্য সকলের মতো নাকি কোন বিশেষ দৃষ্টিতে মনযোগ দিয়ে আমার লিখা বাবা পড়বে আর তার জীবনে ঘটে যাওয়া মুহূর্ত মিলিয়ে নিবে? এরকম বিবিধ চিন্তা-ভাবনার মধ্যে একরকম জোর করে কলম হাতে নিলাম। আমি লিখব, আমার বাবাকে নিয়ে লিখব,আমার জীবন থেকে লিখব। যে লিখায় থাকবে না কোন রঙ/সঙ কিংবা কোন ধরনের আবরন। মোট কথা, একেবারে জীবন থেকে নেওয়া কিছু সত্য উপলব্ধি, সত্য কথন।
“একটি হারমোনিয়াম ও তার ইতিকথা”
যে কথা না বললেই নয়। প্রিয় সন্তানের প্রিয় শখ পূরণ করে প্রিয় বাবা-মা। ঠিক একইভাবে একদিন হঠাৎ আমার ঘরে নতুন হারমোনিয়াম। আমি কি পরিমাণ খুশি হয়েছি হারমোনিয়াম (নতুন) দেখে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। মা’কে জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে কি? সুদূর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার,তারপর উখিয়া সর্বশেষ আমাদের বাড়ি,কোন জায়গায় এক মুহূর্তের জন্য এই সখের হারমোনিয়াম বাবা তার কোল থেকে নামায়নি। এই ভেবে প্রিয় সন্তানের জন্য কেনা এই নতুন হারমোনিয়াম যদি নষ্ট হয়। এমনকি গাড়িতে পর্যন্ত বাবার কোলে স্থান পেয়েছিল আমার জন্য কিনে আনা সেই হারমোনিয়াম। আজও আমি ভুলি নাই সেই মহেন্দ্রক্ষনের কথা হয়ত কোনদিন ভুলতে পারবো না। যদিও সেই হারমোনিয়াম এখন আমার কাছে নেই।
“একটি গান ও তার সুরকথা”
একটি সাদা কাগজ, পৃষ্ঠাজুড়ে বাবার সুন্দর হাতের লিখা শোভা পাচ্ছে। আমার সামনে দিয়ে বলল,” এটা সুর কর, এটা একটা গান।” প্রথম দেখায় কিছু বুঝতে না পারলেও,যখনই মনযোগ দিয়ে পড়তে গেলাম- এক লাইন শেষ করে আর এক লাইনে আমার দৃষ্টি আটকে গেল। কিছুতেই আর সামনে এগুতে পারছিলাম না।
“কান্নাকাটি পড়ে যাবে , ওরে হঠাৎ একদিন”-
বাবা লিখলেন তার কালজয়ী গান। আমি স্তব্ধ,হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ঠিক ঐ লাইনের দিকে-
“কি হইল? কি হইল? বলে লোকে করবে ভীড়”
বাবা কেন এই গান লিখল? এতো দ্রুত কেন তার মনের পরিবর্তন? কিসের ইশারা পেলেন তিনি? এইরকম হাজারো প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘোরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়ত, প্রতিক্ষণ। আমি তো সুর হারা, বাকরুদ্ধ,নিশ্চুপ মানুষের যে অবস্থা হয় ঠিক সেইরকম। গানের সুর করব কি? যেখানে মুখ থেকে কোনো সাড়াশব্দ বের হচ্ছিল না। ধীরে ধীরে সম্বিৎ ফিরে পেলাম। বাবার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি যেন তিনি আমাকে না দেখেন সেভাবে। চলবে——-
এ আর হারুন,উখিয়ার বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী।
লিখাটি লেখক এর ফেসবুক আইডি থেকে নেওয়া
Leave a Reply